ঢাকা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জনপ্রিয় নাম: "মসজিদের শহর" | |
দেশ | বাংলাদেশ |
---|---|
জেলা | ঢাকা জেলা |
মেয়র | সাদেক হোসেন খোকা |
এলাকা | |
- City | ৭০ km² |
জনসংখ্যা | |
- City (২০০৩) | 8,942,300 |
- মেট্রোপোলিটন এলাকা | 10,356,500 |
সময় এলাকা | BST (UTC+6) |
ওয়েবসাইট: http://www.dhakacity.org/ |
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। এটি একটি অতি প্রাচীন শহর। খ্রীষ্টিয় ৭ম শতকেও এর অস্তিত্ব ছিল বলে জানতে পারা যায়। ১৬০৮ সালে ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত সুবা বাংলার রাজধানীর মর্যাদা পায়। মূলতঃ তখন থেকেই শহর হিসেবে এর প্রসার এবং শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা করুন] নামকরণের ইতিহাস
ঢাকার নামকরণের সঠিক ইতিহাস নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। কথিত আছে যে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে হিন্দু দেবী দুর্গার একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ এলাকায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ‘ঢাকা’ বা গুপ্ত অবস্থায় খুঁজে পাওযা গিয়েছিল, তাই রাজা মন্দিরের নাম রাখেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে।
আবার অনেক ঐতিহাসিকের মতে, মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর যখন ঢাকাকে সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন; তখন সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ শহরে ‘ঢাক’ বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবং তা থেকেই শহরের নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে। এখানে উল্লেখ্য যে, মোগল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিল।
[সম্পাদনা করুন] ইতিহাস ও ঐতিহ্য
ধারণা করা হয় কালের পরিক্রমায় ঢাকা প্রথমে সমতট, পরে বঙ্গ ও গৌড় প্রভৃতি রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দীর শেষের দিকে মুসলমানেরা ঢাকা অধিকার করে। ১৬৬৪ সালে শায়েস্তা খাঁ সুবাদার হলে ঢাকার বেশ উন্নতি সাধন করেন। তবে ১৭১৭ সালে ঢাকা থেকে রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করা হয়। ইংরেজ আমলে ঢাকাকে পূর্ব বাংলা ও আসামের রাজধানী করে বঙ্গভঙ্গ(১৯০৫-১৯১২) কার্যকর করা হয়।
[সম্পাদনা করুন] ভূগোল
ভৌগলিক অবস্থানঃ ২৩o৪২' থেকে ২৩o৫৪' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০o২০' থেকে ৯০o২৮' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। ঢাকার চারদিকে নদীপথ দ্বারা বেষ্টিত। ঢাকার উত্তরে রয়েছে টঙ্গী খাল, দক্ষিনে বুড়িগঙ্গা নদী, পূর্বে বালু নদী এবং পশ্চিমে রয়েছে তুরাগ নদী। স্থানিক অবস্থানে ঢাকা মোটামুটিভাবে বাংলাদেশের মাঝখানে অবস্থিত।
আয়তনঃ ৩৬০ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখাঃ প্রায় ১ কোটি
আবহাওয়া: মূলতঃ ক্রান্তীয় অঞ্চলের। বছরের বেশীর ভাগ সময়েই উজ্জ্বল সূর্যকিরণ, প্রচন্ড গরম আর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। নভেম্বর হতে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত শীতকালের সময়টা বেশ চমৎকার এবং সহনীয়।
বৃষ্টিপাতঃ বাৎসরিক ২৫৪০ মিলি মিটার
বাতাসের আর্দ্রতাঃ আনুমানিক ৮০ শতাংশ
[সম্পাদনা করুন] বর্তমান ঢাকা
[সম্পাদনা করুন] স্থানীয় সরকার
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নামের স্ব-শাসিত সংস্থা ঢাকা শহরের পরিচালনের দায়িত্বে আছে। এই শহর ৯০টি (নব্বই)প্রশাসনিক ওয়ার্ডে বিভক্ত এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন কমিশনার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন। প্রতি ৫ বছর অন্তর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে একজন মেয়র নির্বাচন করা হয়, যিনি কর্পোরেশনের কার্যনির্বাহী প্রধান হিসাবে কাজ করেন। ওয়ার্ড কমিশনার ও ৫ বছরের জন্য সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। এছাড়াও মহিলাদের জন্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে ৩০টি (তিরিশ) সংরক্ষিত কমিশনার পদ রয়েছে ।
[সম্পাদনা করুন] যাতায়াত
ঢাকা শহরের মধ্যে যাতায়াত করার জন্য সর্বাপেক্ষা সহজলভ্য ও সস্তা যানবাহন হল সাইকেল রিক্সা। ঢাকার রিক্সা বিখ্যাত। শহরে সর্বমোট রিক্সার সংখ্যা আনুমানিক ৩,২০,০০০। এর মধ্যে মাত্র ৭০,০০০ রিক্সা রেজিস্টার্ড। সাইকেল রিক্সা ঢাকা শহরের রাস্তার যানজটের অন্যতম কারন এবং কিছু বড় বড় রাস্তায় রিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সরকারী সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন পরিচালিত বাস ঢাকা শহরের পরিবহনের আরেকটি জনপ্রিয় উপায়। এছাড়া রয়েছে বহু বেসরকারী বাস সার্ভিস। ২০০২ সালের পর থেকে ঢাকা শহরে পেট্রোল ও ডিজেল চালিত কিছু যানবাহন যথা বেবি ট্যাক্সি, টেম্পো ইত্যাদি বন্ধ করে দেওয়া হয় ও পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাস (Compressed Natural Gas - CNG) চালিত গ্রিন ট্যাক্সি চালু হয়। এর ফলে পরিবেশ দূষণ অনেক কমে এসেছে। ঢাকার অদূরে কূর্মিটোলায় অবস্থিত জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
[সম্পাদনা করুন] নাগরিক পরিসেবা
ঢাকায় নাগরিক পরিসেবা প্রদানের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। ঢাকা শহরের পানির চাহিদা পূরণের জন্য 'ঢাকা ওয়াসা', বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বা বিদ্যুৎ সরবারহ করার জন্য ডেসা এবং ডেসকো, গ্যাস সরবারহ করার জন্য তিতাস গ্যাস প্রভৃতি সেবামূলক সংস্থা নিয়োজিত রয়েছে।
[সম্পাদনা করুন] অর্থনীতি
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান কেন্দ্র ঢাকা। বাংলাদেশের দক্ষ শ্রমিক ও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের বেশীরভাগ মানুষ ঢাকা ও সন্নিহিত অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পে যুক্ত আছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের বৃহত্তম স্টক এক্সচেঞ্জ। ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির পথ থেকে ক্রমে সরে এসে মুক্ত অর্থনীতির সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ঢাকা শহরে বিদেশী বিনিয়োগ ও তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পের দ্রুত উন্নয়ন ঘটেছে।
[সম্পাদনা করুন] জনগোষ্ঠী
ঢাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শহর যা বাঙালি সংস্কৃতির একটি ছবি বলা চলে। ঢাকায় বসবাসকারীদের কিছু অংশের পূর্বপুরুষরা ভারতীয়। তারা অনেকেই ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় ভারত থেকে এসেছিলেন। এদের মধ্যে কিছু বিহারী মুসলমানও ছিল। এদের সংখ্যা বর্তমানে কয়েক লক্ষ। এখানকার বেশির ভাগ লোক মুসলমান সম্প্রদায়ের। কিন্তু সাথে বহু হিন্দু ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম ধর্মানুবলম্বী সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে। ঢাকায় বসবাসকারী প্রায় সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলে, তবে কিছু লোক ইংরেজী ভাষা এবং উর্দু ভাষা বুঝতে ও বলতে পারে। ঢাকা শহরে অনেক গুলো স্কুল আছে যারা ইংরেজী ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে। ঢাকার বাসিন্দাদের কিছু অংশ খুব শিক্ষিত এবং আধুনিক।
পুরনো ঢাকার আধিবাসিদের মধ্যে যারা খুবই পুরনো তাদের কুট্টি বলা হয়, তাদের আলাদা উপভাষা এবং সংস্কৃতি রয়েছে। ঢাকা রাজধানী হওয়ায় সারা বাংলাদেশ থেকেই এখানে লোকজন উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে আসে।
[সম্পাদনা করুন] সংস্কৃতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মূল ধরে তার পার্শ্ববর্তী এলাকা হচ্ছে ঢাকা শহরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমী, চারুকলা ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় গণ গ্রন্থাগার ও জাতীয় যাদুঘর এলাকা সংস্কৃতি কর্মীদের চর্চা ও সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর মূল ক্ষেত্র। এর বাইরে বেইলি রোডকে নাটকপাড়া বলা হয় সেখানকার নাট্যমঞ্চগুলোর জন্য। এছাড়াও নবনির্মিত শিল্পকলা একাডেমীর এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল ও অন্যান্য মঞ্চসমূহ নাট্য ও সঙ্গীত উৎসবে সব সময়ই সাংস্কৃতিক চর্চ্চাকে অব্যাহত ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে নাট্টোৎসব ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের পুরোটা জুড়ে বাংলা একাডেমিতে একুশে বইমেলার আয়োজন করা হয়। বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে পহেলা বৈশাখে রমনা পার্কে ছায়ানটের অনুষ্ঠান সহ সারাদিন গোটা অঞ্চলে সাংস্কৃতিক উৎসব চলে। সাংস্কৃতিক ঋদ্ধতার ধারাবাহিকতায় সেগুনবাগচার মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরও সারা বছর ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।
[সম্পাদনা করুন] শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় হতেই ঢাকা এই প্রাদেশিক রাজধানীর শিক্ষার কেন্দ্র হয়ে উঠে। এই সময়ই ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। আশির দশক পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এর আশেপাশের এলাকাকে এডুকেশন ডিস্ট্রিক বলা হতো। এই এডুকেশন ডিস্ট্রিকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে গভর্ণমেন্ট ল্যাবরেটরী স্কুল, ঢাকা কলেজ, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুল, ইডেন কলেজ, ইষ্ট এন্ড হাই স্কুল, অগ্রণী বালিকা বিদ্যালয়, আজিমপুর গার্লস স্কুল, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কলেজ, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউট)।
ঐতিহ্যগতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম সৃষ্টি হয়েছিল বৃটিশ শাসনামলে। তখন একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো। বুদ্ধদেব বসুর মতো ছাত্র এবং বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের মত শিক্ষক তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে উচ্চশিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রধানত তিনটি মূল ধারা; এগুলোর প্রথমটি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত কারিকুলাম (যা বাংলা অথবা ইংরেজী মিডিয়ামে পড়াশোনা করা যায়), দ্বিতীয়টি হচ্ছে বেসরকারী কেজি লেভেল হতে এ লেভেল পযর্ন্ত ইংরেজী মিডিয়ামের বৃটিশ কারিকুলাম এবং তুতীয়টি হচ্ছে মূলতঃ আরবী, ফার্সী ও উর্দু ভাষা নির্ভর মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। মাদ্রাসাভিত্তিক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন কোনটি সরকার নির্ধারিত কারিকুলাম এবং কোন কোনটি নিজস্ব সৃষ্ট কারিকুলাম ব্যবহার করে শিক্ষা প্রদান করে। শেষোক্ত এ শ্রেনীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর সরকারের কোন প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নেই। এই একই চিত্র ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রায় একশভাগ প্রযোজ্য।
সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ের বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসংখ্যান হচ্ছে নিন্মরুপঃ
প্রাইমারী স্কুল = ৭৯,৮৩৩; সেকেন্ডারী স্কুল = ১৭.৩৮৬; বিভিন্ন পর্যায়ের কলেজ = ২,৭৯৪; বিভিন্ন পর্যায়ের মাদ্রাসা (কওমী মাদ্রাসা বাদে)= ৮,৮১০; পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় = ২১; বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় = ৫২; টেকনিক্যাল ও ভকেশনাল ইনষ্টিটিউট = ২৩১৭; প্রফেশনাল কলেজ = ১৯৯; শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান =১৪৩; (সূত্রঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ২০০৩-২০০৪।)
বলা বাহুল্য নয় যে, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকংশই ঢাকায় অবস্থিত। আশির দশক পর্যন্ত ঢাকা সহ বাংলাদেশে পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষাক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি ছিল। এর পর হতেই বেসরকারি খাতে কিন্ডারগার্টেন ও স্কুলের প্রসার হতে শুরু করে। ১৯৯২ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও ১৯৯৮ সালে তার সংশোধন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে এক বাঁধভাঙ্গা জোয়ার নিয়ে আসে। এযাবত প্রায় ৫২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমিত দিয়েছে সরকার। লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো এর মধ্যে প্রায় ৩০টিই হলো ঢাকায়।
বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বমোট ২১ টি পাবলিক বা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি হচ্ছে ঢাকায়। এগুলো হলোঃ
ঢাকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলোঃ ১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (স্থাপিত ১৯২১); ২. বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (স্থাপিত ১৯৬২); ৩. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (স্থাপিত ১৯৭০); ৪. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (স্থাপিত ১৯৯৭); ৫. শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (স্থাপিত ২০০১)।
বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বমোট ৫২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৩০টিই হলো ঢাকায়। এগুলো হলোঃ
ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলোঃ ০১. নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯২); ০২. ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৩); ০৩. সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৩); ০৪. দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৩); ০৫. ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজী (স্থাপিত ১৯৯৩); ০৬. আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজী (স্থাপিত ১৯৯৪); ০৭. এ.এম.এ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৫); ০৮. আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৫); ০৯. এশিয়ান ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৬); ১০. ইন্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৬); ১১. ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (স্থাপিত ১৯৯৬); ১২. কুইন্স ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৬); ১৩. দি পিপলস্ ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ১৯৯৬); ১৪. ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০০); ১৫. ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০১); ১৬. মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; ১৭. ভিখারুন্নেসা ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০১); ১৮. বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০১); ১৯. ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপ অলটারনেটিভ (স্থাপিত ২০০২); ২০. বেগম গুলচেমনারা ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০২); ২১. সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০২); ২২. স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০২); ২৩. ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০২); ২৪. স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (স্থাপিত ২০০২); ২৫. ইবাইস ইউনিভার্সিটি (স্থাপিত ২০০২); ২৬. ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (স্থাপিত ২০০২); ২৭. প্রেসিডেন্সী ইউনিভার্সিটি; ২৮. ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলোজী এন্ড সায়েন্স; ২৯. রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা; ৩০. ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস; (তথ্যসূত্রঃ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।)
[সম্পাদনা করুন] গণমাধ্যম
ঢাকা থেকে প্রকাশিত বাংলা দৈনিক পত্রিকা
- ইত্তেফাক, সংবাদ, প্রথম আলো, আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ, আমার দেশ, জনকন্ঠ, যুগান্তর, ইনকিলাব, নয়া দিগন্ত, সমকাল, মানবজমিন, পূর্বাঞ্চল, সংগ্রাম
ঢাকা থেকে প্রকাশিত ইংরেজী দৈনিক পত্রিকা
- বাংলাদেশ অবজারভার, বাংলাদেশ টুডে, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, নিউ এইজ, নিউ নেশন, ডেইলী ষ্টার, নিউজ টুডে
সংবাদ সংস্থা
টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র
স্যাটেলাইট টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র
- বিটিভি ওয়ার্ল্ড, চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা, এনটিভি, চ্যানেল ওয়ান, আরটিভি, বৈশাখী, বাংলাভিশন
[সম্পাদনা করুন] খেলাধুলা
সারা বাংলাদেশের খেলাধুলার কেন্দ্র হচ্ছে ঢাকা ষ্টেডিয়াম (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম) ও এর আশেপাশের এলাকা। বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি হলেও ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল সহ আরো অনেক খেলা ঢাকায় নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এক সময় প্রতি বছর ঢাকা ষ্টেডিয়ামে আগা খান গোল্ড কাপ এর মতো আন্তর্জাতিক ফুটবল টূর্ণামেন্ট সারা দেশের মানুষকে উদ্দীপিত করে রাখতো। অল্প কিছু সময় প্রেসিডেন্টস গোল্ড কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টূর্ণামেন্ট ঢাকা ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়াও ঢাকা ষ্টেডিয়ামে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক টূর্ণামেন্ট হয়েছিল এশিয়া কাপ, অনুর্ধ ২১ ফুটবল টূর্ণামেন্ট।
বর্তমানে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তায় অন্যান্য খেলাধুলা ম্রিয়মান হয়ে গেছে বলা যায়। স্বাধীনতা পূর্বের ন্যয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম পুনরায় আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও মিরপুর জাতীয় ষ্টেডিয়ামও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ষ্টেডিয়ামগুলোতে এখন নিয়মিত অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলাসমূহ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের খেলাধুলার সরকারী নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া কাউন্সিল। এর সদর দপ্তর হচ্ছে ঢাকায়। এছাড়াও প্রায় ৩০টি ক্রীড়া ফেডারেশন ঢাকার সদর দপ্তর হতেই জেলা ক্রীড়া সমিতিগুলোর মাধ্যমে সারা দেশের খেলাধুলার কার্যক্রম দেখাশোনা ও পরিচালনা করে। এই ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন যার সদর দপ্তরও ঢাকায় অবস্থিত। উল্লেখযোগ্য ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো হলোঃ বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন; বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড; বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন; বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন; বাংলাদেশ বাস্কেটবল ফেডারেশন; বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশন; বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন; বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশন; বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন; বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন; বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশন; বাংলাদেশ আর্চারী ফেডারেশন; বাংলাদেশ এমেচার এথলেটিক ফেডারেশন; বাংলাদেশ খো খো ফেডারেশন; বাংলাদেশ তাইকুন্ডু ফেডারেশন।
ঢাকার উল্লেখযোগ্য খেলাধুলার কেন্দ্রগুলো হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম এলাকা সংলগ্ন আউটার ষ্টেডিয়াম, ন্যাশনাল সুইমিংপুল, মাওলানা ভাসানী হকি ষ্টেডিয়াম, মোহাম্মদ আলী বক্সিং ষ্টেডিয়াম, উডেনফ্লোর জিমনেশিয়াম, ঢাকা জেলা ক্রীড়া সমিতি; মিরপুর জাতীয় ষ্টেডিয়াম ও তা সংলগ্ন সুইমিংপুল কমপ্লেক্স; মিরপুর জাতীয় ইনডোর ষ্টেডিয়াম; বনানীর আর্মি ষ্টেডিয়াম ও নৌবাহিনীর সুমিইং কমপ্লেক্স। এছাড়াও ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাব মাঠ, ধানমন্ডি ক্লাব মাঠ এবং কলাবাগান ক্লাব মাঠেও সারা বছর ধরে বিভিন্ন লীগ ও টুর্ণামেন্টের খেলা চলে।
[সম্পাদনা করুন] ঢাকার দর্শনীয় স্থানসমূহ
ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ ঢাকেশ্বরী মন্দির, লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, হোসেনী দালান, ছোট কাটরা, বড় কাটরা, কার্জন হল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভবন (পুরাতন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবন), সাত গম্বুজ মসজিদ, তারা মসজিদ, ঢাকা গেইট, পরীবিবির মাজার
পার্ক , বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থানঃ রমনা পার্ক, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ঢাকা শিশু পার্ক, বুড়িগঙ্গা নদী, ঢাকা চিড়িয়াখানা, বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর
স্মৃতিসৌধ ও স্মারকঃ জাতীয় শহীদ মিনার, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, (রায়ের বাজার), অপরাজেয় বাংলা-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আসাদ গেইট
আধুনিক স্থাপত্যঃ জাতীয় সংসদ ভবন, বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন, ভাসানী নভোথিয়েটার, বসুন্ধরা সিটি
[সম্পাদনা করুন] বহির্সংযোগ
- ঢাকা সিটি করপোরেশন
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ভার্চুয়াল বাংলাদেশ
- Dhaka.com
- বাংলাদেশ অনলাইনে ঢাকা
আম্মান • আস্তানা • আশখাবাদ • আবুধাবি • আংকারা • ইসলামাবাদ • ইয়েরেভান • উলানবাটর • কলম্বো • কাঠমান্ডু • কাবুল • কুয়ালালামপুর • কুয়েত সিটি • জাকার্তা • টোকিও • ঢাকা • নয়া দিল্লী • নাইপাইদ • নিকোসিয়া • তাইপে • তাশখন্দ • তিব্লিসি • তেল আভিভ • তেহরান • থিম্পু • দুশান্বে • দামেস্ক • দিলি • দোহা • প্নম পেন • পিয়ং ইয়াং • বন্দর সেরি বেগাওয়ান • বাকু • বাগদাদ • বিশকেক • বেইজিং • বৈরুত • ব্যাংকক • ভিয়েনতিয়েন • মানামা • মালে • মাস্কাট • ম্যানিলা • রিয়াদ • সিঙ্গাপুর • সিউল • সানা হ্যানয় •