কারপাল টানেল সিন্ড্রোম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আন্তর্জাতিক রোগপরিসংখ্যান শ্রেণী সংখ্যা | [আই সি ডি১০: জি৫৬.০] |
ডাক্তারী পরিভাষা | কারপাল টানেল সিন্ড্রোম |
কথ্য পরিভাষা | সিটিএস |
রোগের প্রকার | স্নায়বিক (নিষ্পেষণ স্নায়ুপীড়া/entrapment neuropathy) |
আক্রান্ত তন্ত্র | স্নায়ু তন্ত্র |
রোগের লক্ষণ | কব্জি ব্যাথা (বিশেষত রাত্রে), হাতের আঙুল (বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ, তর্জনী ও মধ্যমা) ঝিনঝিন করা বা অবশ ভাব হাত ঝাড়া দিলে কমে |
রোগ সংঘটন প্রণালী | কব্জির হাড় ও কব্জি ভাঁজকরার টেন্ডন সমূহের মধ্যবর্তী সুড়ঙ্গে মিডিয়ান স্নায়ুর নিষ্পেষণ |
যেসব বিভিন্ন কারণ থেকে রোগটি ঘটতে পারে | অত্যধিক কম্পিউটার বা টাইপরাইটার ব্যবহার, কব্জির চোট, শরীরে বেশী জল জমা, থাইরয়েড স্বল্পতা, মিক্সিডিমা, বাত, গর্ভাবস্থা, ঋতুবন্ধ, অ্যাক্রোমেগালি |
মূল আক্রান্ত জনতা | উন্নত বিশ্বের কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা |
জনবিন্যাস (demography) | মহিলা>পুরুষ, বয়সের সাথে বাড়ে |
চিকিৎসা | স্প্লিন্ট স্থাপন, হাইড্রোকর্টিসোন ইন্জেকসন, শল্যচিকিৎসা দ্বারা চাপমোচন |
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম এক প্রকারের কব্জির প্রদাহজনিত রোগ। কারপাল টানেল অর্থাৎ কব্জির হাড়গুলির(ও সংশ্লিষ্ঠ কব্জি ভাজকরার পেশীগুলির সংযোগকারী টেন্ডন সমূহের)মধ্যবর্তী সুড়ঙ্গে মিডিয়ান স্নায়ুর নিষ্পেষণ/পীড়ন জনিত কারণে এই প্রদাহ হয়ে থাকে।
নিয়মিত ও ক্রমাগত ভাবে কব্জির উপর চাপ পড়ে, যেমন - অনেকক্ষণ ধরে টাইপ করা - এরকম কাজ এই রোগে ঘটায় কারণ:
- দীর্ঘ সময় ধরে বারংবার একই কাজ (রিপিটিটিভ স্ট্রেস ইনজুরি)
- চাপ দিয়ে কাজ করা
- কব্জি বিশৃঙ্খল ভাবে রাখা
- কম্পন
সি টি এস সমস্যাতে সাধারনত মাউস ব্যবহার কারি হাতই আক্রান্ত হয়ে থাকে, তবে কি-বোর্ড ব্যবহার থেকেও এটি হতে পারে ৷ ছবিগুলো দেখলে বোঝা যাবে হাতের তালুর গোড়ার দিক যা সবসময় টেবিলে থাকে সেই অংশের টেন্ডন এবং নার্ভ এতে আক্রান্ত হয়৷ নার্ভ আক্রান্ত হওয়ার ফলে এর প্রভাব অনেক ব্যাপক হয় বা হতে পারে৷
[সম্পাদনা করুন] উপসর্গ
সাধারনত কব্জিসন্ধিতে ব্যাথা বা অস্বস্তী লাগা বেশী সময় কাজ করতে না পারা হাতের পেশীতে ব্যাথা হওয়া এবং হাত অসাড় মনে হওয়া, রাতে ব্যাথা হওয়া, শক্ত হয়ে যাওয়া, হাতে শক্তি না পাওয়া ইত্যাদি৷
[সম্পাদনা করুন] চিকিৎসা
এই রোগের উপষমের জন্য শল্যচিকিৎসা ও অন্যান্য ধরণের চিকিৎসা চালু আছে। মারাত্মক আকার ধারন করলে অর্থাত্ রাতে ঘুমাতে না পারার মত ব্যাথা বা কাজ করাই যায় না এমন অবস্থা হলে স্প্লিন্ট স্থাপন, হাইড্রোকর্টিসোন ইন্জেকসন, বা শল্য চিকিৎসা দ্বারা মিডিয়ান স্নায়ুকে চাপমুক্ত করার দরকার হতে পারে৷ অস্ত্রোপচার করে স্নায়ুকে চাপমুক্ত করে পেশী সমুহের কার্যক্ষমতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। সাধারনত মারাত্মক আকার ধারন করলতবেই শল্য চিকিৎসা করতে হতে পারে৷ পুরো উন্মুক্ত না করে দূরবীন জাতীয় অস্ত্রোপচারও করা সম্ভব।
রোগের কারণ দূর করা চিকিৎসা ছাড়া, এর উপসর্গের নানা উপশমপদ্ধতি চালু আছে, যেমন: ব্যাথার ওষুধ, আল্ট্রা সাউন্ড, লেজার থেরাপি ইত্যাদি৷
[সম্পাদনা করুন] ঠেকাবার উপায়
- কব্জির ব্যায়াম এই রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী৷ হাতের, কব্জীর বিভিন্ন ব্যান্ড এবং বিভিন্ন ধরনের এক্সারসাইজ টিপস ইন্টারনেটে পাওয়া যায়৷
- আরগোনোমিকস কাজ এর পরিবেশ সংক্রান্ত বিদ্যা যেখানে কাজে ব্যবহৃত জিনিষগুলোর (এক্ষেত্রে টেবিল, চেয়ার, কি-বোর্ড ও মাউস)আকার আকৃতি স্বাচ্ছন্দবোধ বাড়ানো ও চোট কমাবার জন্য ডিজাইন করা হয়।