মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিচারপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান একজন শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশের মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা।বিচারপতি হাবিবুর রহমান ১৯৩০ সালে মুর্শিদাবাদে জন্ম গ্রহণ করেন।
[সম্পাদনা করুন] শিক্ষা
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে ১৯৪৯ সালে বি.এ. সম্মান ও ১৯৫১ সালে স্নাতক পাশ করেন। পরবর্তিতে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক ইতিহাসে ১৯৫৮ সালে বি.এ. সম্মান ও স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
[সম্পাদনা করুন] কর্মজীবন
হাবিবুর রহমান তার কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে। পরবর্তিতে তিনি রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানে তিনি ইতিহাসের রিডার (১৯৬২-৬৪) ও আইন বিভাগের ডিন (১৯৬১) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি আইন ব্যবসাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং ঢাকা হাই কোর্টে যোগ দেন। তিনি সহকারি এডভোকেট জেনারেল (১৯৬৯), হাই কোর্ট বার এসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট (১৯৭২) এর দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলেরও (১৯৭২) সদস্য ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত তিনি হাই কোর্টের বিচারপতি ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি আপিল বিভাগে নিয়োগ লাভ করেন, ও ১৯৯৫ পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ১৯৯০-৯১ এই সময়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত বিচাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯৫ সালে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
দেশে বিদেশে বিচারপতি হাবিবুর রহমান অনেক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এগুলোর মধ্যে প্রধান হল অস্ট্রলিয়ার পার্থে অনুষ্ঠিত এশিয়া প্যাসিফিক দেশ সমূহের প্রধান বিচারপতিদের সম্মেলন (১৯৯১), নাইজেরিয়ার আবুজাতে চতুর্থ কমনওয়েলথ প্রধান বিচারপতিদের সম্মেলন (১৯৯২), নেপালের কাঠমুন্ডুতে প্রথম সার্ক প্রধান বিচাপতিদের সম্মেলন (১৯৯৫)।
[সম্পাদনা করুন] তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
১৯৯৫ সালে বিচাপতি হাবিবুর রহমান প্রধান বিচাপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত বিচাপতি হিসেবে তিনি ১৯৯৬ সালের তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
একজন গবেষক ও লেখক বিচাপতি হাবিবুর রহমান সাহিত্য ও অন্যান্য বহু ক্ষেত্রে অনেক অবদান রেখে চলছেন। তার প্রকাশিত বই গুলোর মধ্যে অন্যতম হল:
- ল' অফ রিকুইজিশন (১৯৬৬)
- রবীন্দ্র প্রবন্ধে সঞ্জনা ও পার্থক্য বিচার (১৯৬৮)
- যথা-শব্দ (১৯৭৪)
- মাতৃভাষার সপক্ষে রবীন্দ্রনাথ (১৯৮৩)
- কোরআন সূত্র (১৯৮৪)
- বচন ও প্রবচন (১৯৮৫)
- গঙ্গাঋধি থেকে বাংলাদেশ (১৯৮৫)
- রবীন্দ্র রচনার রবীন্দ্র ব্যাখ্যা (১৯৮৬)
- রবীন্দ্র কাব্যে আর্ট, সঙ্গীত ও সাহিত্য (১৯৮৬)
- অন রাইট্স আন্ড রিমেডিস্
- আমরা কি যাব না তাদের কাছে যারা শুধু বাংলায় কথা বলে (১৯৯৬)
১৯৮৫ সালে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বাংলা একাডেমী এবং বাংলদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির একজন ফেলো ও লিঙ্ক'স ইন এর বেঞ্চার।
বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টাবৃন্দ | |
---|---|
বিচারপতি হাবিবুর রহমান • বিচারপতি লতিফুর রহমান • অধ্যাপক ড: ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ • |