মাইহার ঘরানা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাইহার ঘরানা হচ্ছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের খেয়াল অঙ্গে যন্ত্র সঙ্গীত বাজানোর একটি ধরণ যার জন্ম হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। এ ঘরানার একটি প্রচন্ড প্রভাব গত পঞ্চাশ বছর ধরে দেখা গেছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় যন্ত্র সঙ্গীতে। মূলতঃ রামপুর ঘরানার মধ্যে থেকেই মাইহার ঘরানার সৃষ্টি হয়েছে। রামপুর ঘরানার বিলম্বিত লয়ের গৎ মসিদখানী গৎ এবং দ্রুৎ লয়ের গৎ রাজাখানী গৎ হতেই এই মাইহার ঘরানার সাঙ্গীতিক রূপ বা ধরণ গ্রহণ করা হয়েছে। মাইহার ঘরানার সাঙ্গীতিক সৃজনশীলতা এবং এর সৌন্দর্য কৌশল চূড়ান্ত বিকশিত হয়েছিল বাবা আচার্য আলাউদ্দীন খান সাহেবের হাতে। রামপুর ঘরানার সঙ্গীতই শিখিয়েছেন আচার্য আলাউদ্দিন খান সাহেব, তবে তাতে তাঁর যন্ত্র সঙ্গীতের নিজস্ব খেয়াল অঙ্গের স্টাইলই মাইহার ঘরানাকে সৃষ্টি করেছে । তাঁর বেশীর ভাগ শিষ্যই পরবর্তীতে নিজস্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এঁদের মধ্যে বিখ্যাত হলেন সরোদে তাঁর পুত্র ওস্তাদ আলী আকবর খান, সেতারে পন্ডিত রবি শংকর ও পন্ডিত নিখিল ব্যানার্জী, বাঁশীতে পান্নালাল ঘোষ।
অন্যান্য সঙ্গীত ঘরানার স্রষ্টাদের মতো বাবা আচার্য আলাউদ্দিন খান সাহেব কোন সঙ্গীত পরিবার হতে আসেননি। তবে তিনি তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ বীণকার রামপুর সেনী বীণকার ঘরানার ওস্তাদ মোহাম্মদ ওয়াজির খানের কাছে দীক্ষা নিয়েছেন। এই দীক্ষা হতেই বাবা আচার্য আলাউদ্দিন খান সাহেব যন্ত্র সঙ্গীতে নিজস্ব স্টাইলের সৃষ্টি করেছেন, যা খেয়াল ও ধ্রুপদ অঙ্গের সঙ্গীতকে এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটিয়ে মাইহার ঘরানার রূপ দিয়েছেন।
মাইহার ঘরানায় মূলতঃ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগই বাজানো হয়; তবে তার সাঙ্গীতিক ধরণে ভিন্নতা প্রকাশ করা হয়। প্রথম অংশের আলাপ অঙ্গে মূলতঃ রাগের সৃজনশীলতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। এরপর একটি বা দুটি গৎ তবলার সাথে বাজানো হয়। দ্বিতীয় অংশে শিল্পীরা তবলার তালের সাথে গৎ এর বিভন্ন ধরণের উপর ভিত্তি করে রাগের রূপ প্রকাশ করেন।
[সম্পাদনা করুন] মাইহার ঘরানার প্রধান প্রধান শিল্পী
- বাবা আচার্য আলাউদ্দীন খান সাহেব
- অন্নপূর্ণা দেবী
- ওস্তাদ আলী আকবর খান
- পন্ডিত রবি শংকর
- পন্ডিত নিখিল ব্যানার্জী
- পন্ডিত পান্নালাল ঘোষ
- পার্থ সারথী
- পন্ডিত বিষ্ণু মোহন ভাট
- পন্ডিত জি. এস. সচদেব
- আশীষ খান
- জামালউদ্দিন ভারতীয়া