প্রবেশদ্বার:চিকিৎসা/নির্বাচিত নিবন্ধ/৩০, ২০০৬
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অ্যান্টিবায়োটিক(Antibiotics) একধরণের রাসায়নিক পদার্থ যা কিনা একধরণের অণুজীব তৈরি করে ও তা অন্য ধরণের অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া(Bacteria) ও ছত্রাক(Fungi) অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে।
শতবর্ষ পূর্বে চীনে সয়াবিনের ছাতা (Mold) আক্রান্ত ছানা (Moldy Soybean Curd) বিভিন্ন ফোঁড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হত। চীনারা পায়ের ক্ষত সারাবার জন্য ছাতা (Mold) আবৃত স্যান্ডল পরত। ১৮৮১ সালে ব্রিটিশ অণুজীব বিজ্ঞানী জন টিন্ডেল (John Tyndall) ছাতার জীবানু প্রতিরোধী ভূমিকা লক্ষ্য করেন।
লুই পাস্তুর এবং জোবার্ট লক্ষ্য করেণ কিছু অণুজীবের উপস্থিতিতের পেশাবে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি (Anthrax Bacili) জন্মাতে পারেনা। ১৯০১ সালে এমারিচ(Emmerich) এবং লও (Low) দেখেন যে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি ( Anthrax bacili) আক্রমন থেকে খরগোশকে বাচানো সম্ভব যদি Pseudomonas aeruginosa নামক ব্যাক্টেরিয়ার তরল আবাদ (Liquid culture) খরগোশের দেহে প্রবেশ (Inject) করানো যায়। এই জাতীয় আবিস্কারের পরও ১৯২৯ সালের আগে আন্টিবায়টিক এর যুগ শুরু হয়নি। ১৯২৭ সালে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং প্রথম আন্টিবায়োটিক আবিস্কার করেণ।ফ্লেমিং তার এক পরীক্ষার (Experiment) সময় লক্ষ্য করেণ জমাট আবাদ মাধ্যমে (Solid culture medium)ছাতার উপস্থিতিতে Staphylococcus aureus নামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে পারেনা। আবাদ মাধ্যমে ছাতার উপস্থিতি কাম্য ছিল না, আসলে পরীক্ষাকালীন কোনো অজানা ত্রুটির কারণে ছাতা আবাদ মাধ্যমে চলে এসে ছিল। ফ্লেমিং তখন ঐ ছাতার প্রজাতি চিহ্নিত করতে ও তার জীবানু নাশক বৈশিষ্ট পরীক্ষা করতের আগ্রহি হন। ছাতাটি ছিল [[Penicillium]] প্রজাতির, ফলে ফ্লেমিং Penicillum দ্বারা নিসৃত ঐ পদার্থের নাম দেন পেনিসিলিন (Penicillin)। অন্য আর এক প্রকার ছাতার প্রজাতি(Mold Species)যেমন Aspergillus পেনিসিলিন তৈরি করতে পারে।১৯৪১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম পেনিসিলিন মানুষের দেহে প্রয়োগ হয়। অক্সফোর্ডের একজন পুলিশ কর্মকর্তা Staplylococcus দ্বারা আক্রান্ত ছিলেন। পেনিসিলিনের প্রয়োগে তার অবস্থার নাটকীয় উন্নতি ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্র বাহিনীর সৈন্যদের ক্ষত সারাতে প্রথম পেনিসিলিনের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়। ব্রিটেন, আমেরিকার বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, ফ্লেমিং এর সেই ভুলের কারণে পাওয়া ছাতা এক "যাদুর ঔষধ" তৈরে করতে থাকে যা অসংখ্য জীবন বাচিয়েছিল। ১৯৪৫ সালে ফ্লেমিং, আর্নেস্ট চেইন, ও ফ্লোরে চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।