ক্ষুদিরাম বসু
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্ষুদিরাম বসু (১৮৮৯-১৯০৮) ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে আগষ্ট ১১, ১৯০৮ এ তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
[সম্পাদনা করুন] জন্ম
ক্ষুদিরামের জন্ম হয় ৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৯, অবিভক্ত বাংলার মেদিনিপুর জেলার বহুভাইনি গ্রামে। তাঁর পিতা, ত্রৈলোক্যনাথ বসু নাদাজোলের স্থানীয় জমিদারের তহশীলদার ছিলেন। ক্ষুদিরামের মাতার নাম লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। অল্প বয়সেই মাতাপিতাকে হারিয়ে বড় বোনের কাছে লালিত পালিত হন। শিক্ষা জীবন শুরু করেন তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুলে। পরবর্তীতে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল পড়ার সময় সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯০২ সনে যূগান্তর দলে যোগ দিয়ে বিপ্লবী কর্মকান্ডে মনোনিবেশ করেন।
[সম্পাদনা করুন] বিপ্লবী কর্মকান্ড
ভগবদ্ গীতা পড়ে ক্ষুদিরাম ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি বঙ্গভঙ্গের চরম বিরোধী ছিলেন, এবং বাংলা প্রদেশের এই বিভাজন তাকে আরো বেশী উদবুদ্ধ করে। বিলাতি দ্রব্য বয়কট, বিলাতি লবণের নৌকা ডোবানো প্রভৃতি কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মেদিনীপুরের এক প্রদর্শনীতে বিপ্লবী পত্রিকা 'সোনার বাংলা বিলির করার সময়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে পুলিশকে মেরে পালিয়ে যান। এই অভিযোগে পরে গ্রেফতার হলেও বয়স কম বলে সরকার মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়। বিপ্লবীদের গোপন সংস্থায় অর্থের প্রয়োজন পড়লে মেলব্যাগ লুট করেন। বিপ্লবী দল- কর্তৃক কলকাতার তদানীন্তন চীফ প্রেসিডেন্সী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এই কাজ সম্পন্ন করার দ্বায়িত্ব পরে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর উপর। নিরাপত্তার কারনে সরকার কিংসফোর্ডকে মজফ্ফরপুরে বদলি করলে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী মজফ্ফরপুরে আসেন। ১৯০৮ সনে ৩০ এপ্রিল রাত ৮ টার সময় কিংসফোর্ডের গাড়ী ভেবে মজফ্ফরপুরের ইউরোপীয় ক্লাব থেকে ফেরা একটি গাড়ী লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের ফলে দুজন ইউরোপীয় মহিলা (মিসেস কেনেডি, তাঁর কন্যা) এবং চাকর নিহত হন। পরের দিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। ১১.৮.১৯০৮ সনে তাঁর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। ফাঁসির আদেশ শুনে ক্ষুদিরাম বসু বলেন, মৃত্যুতে তার কিছুমাত্র ভয় নাই।