কাজী নজরুল ইসলাম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬), বিদ্রোহী কবি। বাংলা ভাষার অন্যতম সাহিত্যিক, দেশপ্রেমী, বাংলাদেশের জাতীয় কবি। দুই বাংলাতেই সমানভাবে সমাদৃত তাঁর কবিতা ও গান।
বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, এবং সৈনিক, অন্যায় এবং অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই সোচ্চার। কবিতায় এবং গানে তাঁর এই মনোভাবই প্রতিফলিত। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ। "বল বীর / চির উন্নত মম শির" - যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে - কাজেই "বিদ্রোহী কবি"।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা করুন] জন্ম, বংশ পরিচয় ও শৈশবকাল
১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জৈষ্ঠ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। দাদা কাজী আমিনউল্লাহর পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয়া পত্নী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া। বাবা মারা যান বয়স যখন মাত্র নয় বছর। পারিবারিক অভাব অনটনের কারনে তাঁর শিক্ষা বাধাগ্রস্থ হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে তাকে নেমে যেতে হয় রোজগারে ।
[সম্পাদনা করুন] জীবিকা
বাল্যকালেই একটি বেকারিতে রুটি বানানোর কাজ নেন নজরুল। সেখানে তিনি রুটি সেকতেন এবং গলা ছেড়ে গান গাইতেন। তাই দেখে লোকজন আদর করে তার নাম দিল দুখু মিঞা। এরপর তিনি একটি মসজিদের খাদেমের কাজ করেন কিছুকাল এবং সেখানেই তাঁর ইসলাম শিক্ষার হাতেখড়ি।
আঠারো বছর বয়সে তরুণ কবির কানে এলো বিশ্বযুদ্ধের আহ্বান। রাণীগঞ্জের দশম শ্রেণীর ছাত্র, নাম লেখালেন বেঙ্গল রেজিমেন্টে হাবিলদার হিসেবে। পৌঁছে গেলেন সুদূর করাচী। যুদ্ধ যোঝার সুযোগ ঘটল না, তবে সৈনিকের ছন্দবদ্ধ কদমক্ষেপ পৌঁছে গেল কবি মানসিকতার মূলে। তাঁর বহু গানের সুর বাঁধা কুচকাওয়াজের তালে তালে: যেমন "চল্ চল্ চল্, উর্দ্ধগগনে বাজে মাদল্.."
[সম্পাদনা করুন] অবদান
যুদ্ধশেষে ১৯২০ সালে কলকাতায় ফিরলেন নজরুল। দু'বছরের মধ্যেই বিজলী পত্রিকায় প্রকাশিত হল যুগান্তকারী কবিতা বিদ্রোহী। ১৯২২ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অগ্নিবীণা'। তখনকার হিন্দুপ্রধান সাহিত্যগোষ্ঠীতে সসম্মানে প্রতিষ্ঠিত হলেন তরুণ নজরুল।
সমসাময়িক ভারতে তখন ইংরেজ প্রোত্সাহিত সাম্প্রদায়িকতার যুগ। হিন্দু মুসলমান বিদ্বেষের বিরোধ করলেন কবি। তাঁর কলমরেখায় প্রকাশ পেল গান:
- মোরা একই বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু মুসলমান ।
যোগী গুরুর কাছে যোগ শিক্ষা গ্রহণ করলেন। "অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারী" গানখানিতে তিনি বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর সেই যোগী গুরুর। শ্যামাসঙ্গীত এবং কৃষ্ণভক্তির গানও লিখলেন বহু।
[সম্পাদনা করুন] বার্ধক্য ও মৃত্যু
১৯৪৮ সাল নাগাদ তিনি বাকশূন্য ও ভাবলেশশূন্য হয়ে পড়েন। সম্ভবত তার নিউরোসিফিলিস হয়েছিল [১] (যা তখনকার দিনে সিফিলিস রোগের এক সম্ভাব্য জটিলতা হিসেবে গণ্য হত)। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁকে সুস্থ করে তোলা যায় নি।
[সম্পাদনা করুন] গ্যালারি
[সম্পাদনা করুন] গ্রন্থসূচী
এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন: কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য কর্ম তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্য কর্মের মধ্যে রয়েছে-
- কাব্য - অগ্নিবীণা (১৯২২), দোলন-চাঁপা (১৯২৩), বিষের বাঁশি (১৯২৪), ভাঙ্গার গান (১৯২৪), ছায়ানট (১৯২৫), সাম্যবাদী (১৯২৫), সর্বহারা (১৯২৬), ফণি-মনসা (১৯২৭),
- প্রবন্ধ - যুগবাণী (১৯২২),
- নাটক -
[সম্পাদনা করুন] তথ্যসূত্র
- ↑ Syed Mehdi Momin.A New Insight Into Nazrul's Life, সুফি জুলফিকার হায়দার রচিত "নজরুলের হীবনের শেষ অধ্যায়" গ্রন্থ - অবলম্বনে