হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লেফটেনেন্ট জেনারেল (অবঃ) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ (ফেব্রুয়ারি ১, ১৯৩০) বাংলাদেশের সাবেক সেনা প্রধান ও রাষ্ট্রপতি, এবং জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) উপদলের নেতা ও রংপুর জেলা হতে জাতীয় সংসদ সদস্য।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা করুন] জন্ম ও শৈশব
১৯৩০ খ্রীস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি ১ তারিখে তিনি রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রংপুর জেলায় শিক্ষাগ্রহণ করেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
[সম্পাদনা করুন] পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে এরশাদ
১৯৫২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬০ - ১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কেন্দ্রে অ্যাডজুটান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি কোয়েটার স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি শিয়ালকোটে ৫৪ বিগ্রেডের মেজর ছিলেন। ১৯৬৯ সালে লেফটেনেন্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি লাভের পর ১৯৬৯ - ১৯৭০ সালে ৩য় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডেন্ট ও ১৯৭১ - ১৯৭২ সালে ৭ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
[সম্পাদনা করুন] বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এরশাদ
পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পর ১৯৭৩ সালে তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অ্যাডজুটান্ট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে তিনি কর্নেল ও ১৯৭৫ সালের জুন মাসে সেনাবাহিনীতে বিগ্রেডিয়ার পদে পদোন্নতে পান। ১৯৭৫ সালেই তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান ও Deputy Chief of Army Staff হিসেবে নিয়োগ পান।
[সম্পাদনা করুন] রাষ্ট্রপতি এরশাদ
৩০ মে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হবার পর, এরশাদের রাজনৈতিক অভিলাশ প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২৪ মার্চ ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। ১১ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সাল নাগাদ তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে দেশ শাসন করেন। ঐ দিন তিনি দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ.এফ.এম আহসানুদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে নিজের অধিকারে নেন। এরশাদ দেশে উপজেলা পদ্ধতি চালু করেন এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই দলের মনোনয়ন নিয়ে ১৯৮৬ সালে পাঁচ বছরের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জামায়াত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যদিও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এই নির্বাচন বয়কট করে। সাধারণ নির্বাচনে তার দল সংখ্যা গরিষ্ঠ আসন লাভ করে। বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে রাষ্ট্রপতি ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে এই সংসদ বাতিল করেন। ১৯৮৮ সালের সাধারন নির্বাচন সকল দল বয়কট করে। এরশাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দেশের জনগনকে সাথে নিয়ে সকল বিরোধী দল আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে।
[সম্পাদনা করুন] নব্বইয়ের পরে এরশাদ
ক্ষমতা হারানোর পর জেনারেল এরশাদ গ্রেফতার হন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি জেল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে নির্বাচিত হন। বি.এন.পি সরকার তার বিরুদ্ধে কয়েকটি দুর্নীতি মামলা দায়ের করে। তার মধ্যে কয়েকটিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন এবং সাজাপ্রাপ্ত হন। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও তিনি পাঁচটি আসন থেকে নির্বাচিত হন। ছয় বছর আবরুদ্ধ থাকার পর ৯ জানুয়ারি ১৯৯৭ সালে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তার প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি ২০০০ সালে তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পরে, যার মধ্যে একটি অংশের তিনি এখনো চেয়ারম্যান।
পূর্বসূরী: আফম আহসানউদ্দিন চৌধুরী |
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ডিসেম্বর, ১৯৮৩ - ডিসেম্বর ৬, ১৯৯০ |
উত্তরসূরী: শাহাবুদ্দিন আহমেদ |
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি | |
---|---|
শেখ মুজিবুর রহমান •আবু সাঈদ চৌধুরী • মোহাম্মদউল্লাহ • শেখ মুজিবুর রহমান • খন্দকার মোশতাক আহমেদ • আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম • জিয়াউর রহমান • আব্দুস সাত্তার • হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ •আফম আহসানউদ্দিন চৌধুরী • হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ • শাহাবুদ্দিন আহমেদ • আবদুর রহমান বিশ্বাস • শাহাবুদ্দিন আহমেদ • একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী • জমিরুদ্দিন সরকার • ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ |