ল্যেভ তল্স্তোয়
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ল্যেভ তল্স্তোয় (রুশ ভাষায় Лев Николаевич Толстой ল্যেভ নিকলায়েভিচ তল্স্তোয়) (২৮শে আগস্ট,১৮২৮ - ২০শে নভেম্বর, ১৯১০) একজন খ্যাতিমান রুশ লেখক। তাকে রুশ সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক, এমনকি বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তার দুইটি অনবদ্য উপন্যাস যুদ্ধ ও শান্তি (ইংরেজি War and Peace; রচনাকাল ১৮৬৩-১৮৬৯) এবং আন্না কারেনিনা ( রচনাকাল ১৮৭৫-১৮৭৭) ।তল্স্তোয়-এর জন্ম তুলা প্রদেশের ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নামক জায়গায়। তিনি ছিলেন পরিবারের চতুর্থ সন্তান। শিশু বয়সে তার বাবা মা মারা যান এবং আত্মীয় স্বজনরাই তাকে বড় করেন। তিনি উপন্যাস ছাড়াও নাটক,ছোট গল্প এবং প্রবন্ধ রচনায় ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯১০ সালের ২০ নভেম্বর রাশিয়ার আস্তাপোভো নামক এক প্রত্যন্ত স্থানের রেলওয়ে স্টেশনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। তার মৃত্যুর পর ১৯২৮-১৯৫৮ এর মধ্যবর্তী সময়ে তার সাহিত্যকর্ম ৯০ খন্ডে বিভক্ত হয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এ প্রকাশিত হয়।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা করুন] শিক্ষা জীবন
চেষ্টায় আরো অনেক ভাষা শিখেছিলেন তিনিঃ লাতিন, ইংরেজী, আরবি, তুর্কো-তাতার, ইতালীয়, গ্রীক এবং হিব্রু। সঙ্গীতশাস্ত্র এবং চিত্রাংকন বিদ্যাতেও মোটামুটি পারদর্শি ছিলেন তিনি। তাঁর একাগ্রতা ও পরিশ্রম করার শক্তি ছিলো অসাধারণ, তিনি মেধাবীও ছিলেন। তিনি বস্তুতপক্ষে রবীন্দ্রনাথের মত স্বশিক্ষিত ছিলেন।
[সম্পাদনা করুন] ব্যক্তিজীবন
তাঁর জীবনী শক্তি ও কর্মোদ্যম ছিল দানবীয় রকমের প্রচন্ড। ভালো শিকারি ছিলেন এবং ভয়ংকর একগুয়ে স্বভাবের ছিলেন। একবার ভালুক শিকারে গিয়েছিলেন, একটা ভালুক থাবা মেরে চোখের নিচে থেকে বাঁ দিকের গাল ছিড়ে নামিয়ে দেয়; দুই সপ্তাহ পরে ভালো হয়ে তিনি ফের শিকারে যান এবং ঐ ভালুকটিকে বধ করেন। বন্ধু-বান্ধব বা সমাজ কি বলবে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজে যা উচিত এবং ন্যায্য বলে ভেবেছেন তাই করেছেন সবসময়। শান্ত-সুবোধ প্রকৃতির ছিলেন না, যৌবনে প্রচুর ধার-দেনা করেছেন এবং বিষয় সম্পত্তি নষ্ট করেছেন।পাদ্রী-পুরুতদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের সমালোচনা করেছেন, এবং তার শাস্তি স্বরুপ যাজক সম্প্রদায় ঘোষনা করেছেন যে, তলোস্তয় কে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে বহিষ্কার করা হল, তিনি আর খ্রিস্টান বলে গণ্য হবেন না। এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে যারা ঈশ্বর ও যীশুকে নিয়ে ব্যবসা করে তাদের চেয়ে তিনি সহস্র গুন বেশী ধার্মিক খ্রিস্টান। তিনি যখন মারা যান তখন পাদ্রী-পুরুতদের দল ভিড় করে এসেছিলেন, কিন্তু কাউকেই কাছে ঘেষতে দেওয়া হয় নি; এবং দেশের ও বিদেশের হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়াই তাঁর শবযাত্রায় শামিল হয়ে তাঁকে সমাহিত করে। অন্যদিকে, সম্রাটের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই মুখর ছিলেন, স্বনামে ও বেনামে দেশের ভিতরে ও বাইরে জার-শাসনের সমালোচনা করে লেখা ছাপিয়েছেন; কিন্তু শাসক গোষ্ঠী ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় নি, পাছে তাদের যদি আরো দূর্নাম এবং কেলেংকারীর বোঝা বইতে হয়। নিজের জমিদারিতে দরিদ্র চাষাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য স্কুল খুলেছিলেন, তাতে নিজে পড়িয়েছিলেন। দেশে দূর্ভিক্ষ হলে আক্রান্ত অঞ্চল সরজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখে বেড়িয়েছিলেন। সরকারের বিরুদ্ধে ঔদাসীন্যের অভিযোগ এনেছেন, আদমশুমারীতে অংশ নিয়েছেন। আইনের নামে বিচারের প্রহসন কিভাবে হয় তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য দিনের পর দিন আদালত আর জেলখানায় ঘুরেছেন। এমন সততা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ বিস্ময়কর। তাঁর মনের গড়ন ছিলো ভাবুকের, দার্শনিকের। সে জন্যই তিনি যখন গল্প-উপন্যাস-নাটক ইত্যাদি সৃজনশীল সাহিত্য রচনা করতে শুরু করলেন, সেখানে কোথাও অবাস্তব রোম্যান্টিক কল্পনা আমরা দেখতে পাই না। তিনি সেসব মানুষ, সামাজিক স্তর বা জীবনযাত্রার ছবিই তাঁর কাহিনী তে এঁকেছেন যা তিনি নিজে দেখেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতার পরিধিও ছিলো বিশাল-সমাজের সবচেয়ে নিচু তলার মানুষ থেকে শুরু করে রাজদরবারের লোক-জনের সাথে তিনি মিশতে পারতেন। তিনি দীর্ঘজীবন লাভ করেছিলেন এবং নানা কারণে তাঁর শিল্পী জীবনের সবটুকুই অশান্তির মধ্যে কেটেছে। এই অশান্তির একটি প্রধান কারন ছিলো- সমাজে বা সভ্যতায় প্রচলিত কোন বিশ্বাস বা রীতিনীতি তিনি বিনা প্রশ্নে মেনে নেন নি।
[সম্পাদনা করুন] সাহিত্যকর্ম
তাঁর রচনার পরিমান ছিলো বিশালঃ ছোটগল্প, বড়গল্প, উপন্যাস, নাটক, শিশুসাহিত্য, প্রবন্ধ, ডায়েরী, চিঠিপত্র সব মিলিয়ে তাঁর রচনা সমগ্র প্রায় ৯০ খন্ডে বিভক্ত।
[সম্পাদনা করুন] উপন্যাস
- পুনরুত্থান(১৮৯৯)
- যুদ্ধ ও শান্তি (ওয়ার এন্ড পিস)(১৮৬২-৬৮)
- আন্না কারেনিনা(১৮৭৮)
[সম্পাদনা করুন] বড় গল্প
- ইভান ইলিচের মৃত্যু(১৮৮৬)
- ফাদার সিয়ের্গি(১৮৯৮)
[সম্পাদনা করুন] নাটক
- অন্ধকারের শক্তি(১৮৮৭)
- জিন্দা লাশ(১৯০০)
[সম্পাদনা করুন] শেষজীবন ও মৃত্যু
ধনীর দুলাল তলস্তয় শেষ বয়সে প্রায় সন্তের জীবন-যাপন করতে চেয়েছিলেন। নিজের কাজ তিনি নিজে হাতে করতেন, এমন কি জুতো নিজে তৈরী করে পরতেন, চাষা-ভুষোর মত সাধারন ও অল্প আহার করতেন, পরতেন ক্ষেত মজুরের পোষাক। শেষ বয়সে তিনি কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পথিমধ্যে ঠান্ডা লেগে তাঁর নিউমোনিয়া হয়। এতেই তিনি মারা গেলেন বাড়ি থেকে দূরে এক রেলস্টেশনে ২০শে নভেম্বর ১৯১০ সালে। পরে তাঁর মরদেহ গ্রামে নিয়ে সমাহিত করা হয়। পাঁচ-ছ বছর বয়সেই তিনটি ভাষা শিক্ষায় হাতেখড়ি হয় তাঁর-মাতৃভাষা রুশ, ফরাসী ও জার্মান ভাষায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে গিয়ে ও পরিণত বয়সে নিজের
ক্লাসিসিজম (১৭০০-১৮০০): আন্তিয়োখ দ্মিত্রিয়েভিচ কান্তেমির - ভাসিলি কিরিল্লভিচ ত্রেদিয়াকোভ্স্কি - মিখাইল ভাসিলিয়েভিচ লমনোসভ - আলেক্সান্দ্র পেত্রোভিচ সুমারোকভ - গাভ্রিলা রমানভিচ দেজার্দিন
জ্ঞানবাদী বাস্তবতা (১৭০০-১৮০০): দেনিস ইভানভিচ ফন্ভিজিন - আলেক্সান্দ্র রাদিশ্শ্যেভ - ইভান আন্দ্রেইয়েভিচ ক্রিলোভ সেন্টিমেন্টালিজম: নিকলাই মিখাইলভিচ কারাম্জিন রোমান্টিসিজম: ভাসিলি আন্দ্রেইয়েভিচ জ্কোভ্স্কি - কন্দ্রাতি ফিয়োদরভিচ রিলেইয়েভ - আলেক্সাদ্র সের্গেইয়েভিচ গ্রিবইয়েদভ - আলেক্সাদ্র সের্গেইয়েভিচ পুশ্কিন - মিখাইল য়্যুরিয়েভিচ ল্যের্মন্তভ - নিকলাই ভাসিলিয়েভিচ গোগল - আলেক্সেই ভাসিলিয়েভিচ কল্ৎসোভ - আলেক্সান্দ্র নিকলায়েভিচ অস্ত্রোভ্স্কি প্রকৃতিবাদ: ভিস্সারিওন বেলিন্স্কি - ইভান সের্গেইয়েভিচ তুর্গ্যেনেভ - ইভান আলেক্সান্দ্রভিচ গন্চারভ - আলেক্সান্দ্র ইভানভিচ হের্ৎসেন - নিকলাই আলেক্সেইয়েভিচ নেক্রাসভ কলাকৈবল্যবাদ: ফিয়োদর ইভানভিচ ত্যুত্চেভ - আফানাসি আফানাসিয়েভিচ ফ্যেত সমালোচনা সাহিত্য: নিকলাই গাভ্রিইলাভিচ চের্নিশ্যেভ্স্কি - নিকলাই আলেক্সান্দ্রভিচ দব্রল্যুবোভ - দ্মিত্রি ইভানভিচ পিসারেভ - মিখাইল ইয়েভ্গ্রাফভিচ সাল্তিকোভ শ্চেদ্রিন বিচারমূলক বাস্তবতা: ফিয়োদর মিখাইলভিচ দস্তইয়েভ্স্কি - ল্যেভ্ নিকলাইয়েভিচ তল্স্তোয় - আন্তন পাভ্লভিচ চ্যেখভ সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতা: মাক্সিম গোর্কি - আলেক্সান্দ্র ইভানভিচ কুপ্রিন - ইভান আলেক্সেইয়েভিচ বুনিন - আলেক্সেই নিকলাইয়েভিচ তল্স্তোয় আধুনিকতাবাদ: লেয়োনিদ নিকলাইয়েভিচ আন্দ্রেইয়েভ প্রতীকবাদ: ভাল্যেরি ইয়াকভ্লেভিচ ব্র্যুসভ - ভিয়াচেস্লাভ ইভানভ - আন্দ্রেই বিয়েলি - আলেক্সান্দ্র আলেক্সান্দ্রভিচ ব্লক চূড়ান্তবাদ: নিকলাই স্তেপানভিচ গুমিলিয়োভ - ওসিপ্ য়েমিলিয়েভিচ মান্ডেল্স্টাম - আন্না আন্দ্রেইয়াভ্না আখ্মাতভা- ইমেজইজম: সের্গেই আলেক্সান্দ্রভিচ য়েস্যেনিন ভবিষ্যৎবাদ: ভিক্তর ভ্লাদিমিরভিচ খ্লেব্নিকভ - ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরভিচ মায়াকোভ্স্কি - মারিনা ইভানভ্না ত্সভেতায়েভা - বরিস লেয়োনিদভিচ পাস্তের্নাক প্রাথমিক সোভিয়েত সাহিত্য: নিকলাই আসেইয়েভ - নিকলাই তিখ্নভ গঠনবাদ: ইলিয়া সেল্ভিন্স্কি - এদুয়ার্দ বাআইজাক-ভ্লাদিমির আলেক্সান্দ্রভিচ লুগোভ্স্কোয় - পাভেল গ্রিগরিয়ভিচ আন্তকোল্স্কি - প্রলেতারীয়: দেমিয়ান বিয়েদ্নি - ইওসিফ পাভ্লভিচ উৎকিন - মিখাইল স্ভেৎলোভ - আলেক্সান্দ্র আন্দ্রেইয়েভিচ প্রকোফিয়েভ - মিখাইল ভাসিলিয়েভিচ ইসাকোভ্স্কি - আলেক্সেই আলেক্সান্দ্রভিচ সুরকোভ - স্তেপান পেত্রোভিচ শ্চিপাচোভ - ইলিয়া গ্রিগোরিয়েভিচ এলেনবুর্গ আইজাক বাবেল - আলেক্সান্দ্র সল্ঝেনিত্সিন - জোসেফ ব্রডস্কি - বরিস আকুনিন - - ভার্লাম শালামভ - ভাসিলি গ্রস্ম্যান - ভ্লাদিমির নাবোকভ্ - মিখাইল বুল্গাকভ্ - মিখাইল লের্মোন্তোভ্ - মিখাইল শলোখভ্ |